খুঁজুন

Tuesday, January 17, 2017

সতের এক্কে সতের



আজকের তারিখটা কিন্তু দারুণ। ১৭-০১-১৭। ১৭ গুণ ১ = ১৭। প্রতিটি ডিজিট যোগ করলেও ১৭ হয় (১+৭+০+১+১+৭ = ১৭)। দারুণ একটা বিষয় 'আবিষ্কার' করলাম তো!

মানুষ যে কেন বড় হয়! বিশেষ করে ছেলেদের বড় হওয়া ঝামেলার। যতই বড় হচ্ছি, ততই বাড়ছে দায়িত্ব, প্রত্যাশার চাপ। পড়ালেখা করো মন দিয়ে, পড়ালেখা শেষে আবার পড় চাকরির পড়া, চাকরি পেলে এবার একটা বিয়ে করো! আর যেই বিয়ের জালে ফেসে গেলে, সেই তোমার ঘাড়ে বাড়তি এক পরিবার। বড় হলেই মানুষের আসল চেহাড়া দেখা যায়!

তবুও তো মানুষ বড় হয়! বড় তো হতেই হয়। ছোট থাকতে চাইলেও সে পারে কই? পারে নাতো! আমিও তো বড় হচ্ছি। চলে গেলো আরও একটি বছর। হতাশা, ব্যার্থতা আর হয়তো কিছু সাফল্যও অর্জন করেছি। কিন্তু আসল কথা হলো, আমি পথ ধরে হাঁটছি। ঠিক না বেঠিক পথ আমি জানি না, শুধু জানি থেমে নেই আমি। আজকালকার দুনিয়ায় সত্য ও সুন্দরের পথে টিকে থাকার চেষ্টাটাই বা কম সাফল্যের কে বললো?

মা একটু আগে ফোন দিলো। দিয়ে মনে করিয়ে দিলো, সেই দিনটাও নাকি মঙ্গলবারই ছিল, বাংলায় ৩ মাঘ, ইংরেজিতে ১৭ জানুয়ারি। ঠিক আজকের মতো অথবা এর চেয়ে বেশি শীত ছিল সেই রাতে। ফরিদপুরের পানি ওয়াপদা (পানি উন্নয়ন বোর্ড) এর নির্মাণ কাজ চলছে। পিছের বাড়িটাই আমাদের ছিল। রাত আনুমানিক ৩টায় মায়ের প্রসব বেদনা উঠলো। রিক্সায় করে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা সফল হতে দিলাম না আমি। দুনিয়া দেখতে চাই, জলদি, তখনই। রিক্সায় ওঠার আগেই সেই নির্মাণকাজের জন্য এনে রাখা খোয়া বালির মাঝে লাফ দিয়ে পড়লাম। কোনো কান্নাকাটি নাই। মা থেকে আমাকে আলাদা করা হলো। তারপর দাদু তাঁর সাদা খদ্দরের চাদরটা দিয়ে দু-তিনবার আমাকে ঝাঁকি দিতেই, সেই যে কান্না শুরু করলাম, তা আজও নিরবে অথবা সরবে চলছে।

গল্পটা বাবার মুখে শোনা। বাবা বলতো, সেই রাতে আমার নাকি বাঁচারই কথা ছিল না। বেঁচেই যেহেতু গেছি, সেহেতু বাবার মতে আমি 'খুব বড় কিছু হবো', খুব ভালো অথবা খুব খারাপ কিছু। (আমার আগে বাবা-মায়ের এক সন্তান পৃথিবীর আলো দেখেনি। আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ, কারণ সে বেঁচে থাকলে 'পরিবার পরিকল্পনা'মাফিক আমি আর জন্ম নিতাম না!)

কী হচ্ছি বা কী হবো জানিনা, শুধু জানি, এখনও বেঁচে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আবেগ অভিমান হতাশা ঝেরে ফেলে, বাস্তবিক হয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। সবার জন্য সুন্দর ও ভালোবাসার রঙে রাঙ্গানো একটা পৃথিবী গড়তে চাই।

No comments:

Post a Comment