শুনলাম শ্রীঅঙ্গনের মহানাম সম্প্রদায়ের সভাপতি কান্তি বন্ধু আজ 'প্রেসার বেড়ে' অ্যাম্বুলেন্সযোগে ডায়াবেটিস হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আশা করা যেতেই পারে তিনি এক সপ্তাহের আগে ফিরবেন না এবং চিকিৎসকরা তাঁকে 'উন্নত চিকিৎসা'র জন্য ভারতে পাঠাবেন। কী দারুণ টাইমিং! অসুস্থতাও আজকাল সময় করেই আসে! তাঁর শিষ্যরা ইতিমধ্যেই বলতে শুরু করেছেন, 'আহারে, বন্ধুসেবককে কতই না ভালোবাসতেন মহারাজ! তাঁর প্রস্থান সইতে না পেরে তিনিও শয্যাশায়ী হলেন!' অথচ লাইভ ভিডিওতে আপনারা দেখেছেন তিনি জনতার দাবির মুখে বন্ধুসেবকের সমাধি শ্রীঅঙ্গনে রেখেছেন, নইলে বাইরে পাঠানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখা ছিলো। সমাধিস্থ করার সময়ও তিনি দূর থেকে দেখেই চলে যান, কাছে যাননি।
.
সুতরাং, আগামীকাল সভাপতি কান্তি বন্ধুর বাদী হয়ে করা ৩০৬ ধারায়(সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের জেল) করা মামলায় ৩ দিনের রিমান্ড শেষে আসামী বিজ্ঞান বন্ধু যখন আদালতের কাঠগড়ার দাঁড়াবেন, গতবারের মতো এবারও হয়তো বাদী কান্তি বন্ধু সেখানে অনুপস্থিত থাকবেন। এবার আর কেউ তাঁকে 'ছি ছি' করতে পারবে না, কারণ এবার তিনি 'অসুস্থ'! শোনা যাচ্ছে, বিজ্ঞান বন্ধুর পক্ষে লড়ার জন্য নেতা গোছের এপিপিসহ প্রায় ৩০-৪০ জন আইনজীবী নাকি ইতিমধ্যেই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডঃ সুবল সাহার অধীনে আদালতে লড়ার জন্য প্রস্তুত! অন্যদিকে বাদীপক্ষে কোনো উকিলই এখনও ঠিক করা হয়নি বলে ভেতরের একটি সূত্র জানিয়েছে!
.
ফলে কি হবে? উকিলের অভাবে আসামী জামিন পেয়ে বেরিয়ে আসবে কালকেই? কারণ কালকেই আদালতের ছুটির আগের শেষ কর্মদিবস! তবে ঐ আদালতের বিচারক যিনি, তাঁকে যতটা চিনি, এতো সহজে তাঁর হাত থেকে ছাড়া পাওয়া মুশকিল হবে। তিনি বরিশালের লোক, খুব শক্ত। ১ এপ্রিলে আমাদের ওপর হামলার ঘটনায় আমার মা বাদী হয়ে করা মামলাটি তিনিই পি,বি,আইতে তদন্তে দিয়েছেন এবং সবাই বলে পুলিশের সংস্থাগুলোর মাঝে এই সংস্থাটির সুনামই এখন সবচেয়ে বেশি।
.
তবে প্রশাসন-পুলিশ-বিচারকেরা আন্তরিক থাকলেও যদি আঙিনার সাধুরা চুপচাপ অন্যায়কে মেনে নেন, তাহলে সেটা শ্রীঅঙ্গন শুধু নয়, মহানাম সম্প্রদায় শুধু নয়, হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্যও লজ্জা ও কলংকের হবে। যদি কাল বিজ্ঞান বন্ধু জামিনে বের হয়ে আসে এবং আবার আঙিনায় ফিরে আসে, তবে তা হবে বন্ধুসেবকের 'আত্মাহুতি'র অসম্মান। কেউ কেউ তো এমনও বলতে শুরু করেছে, বন্ধুসেবক আত্মহত্যা করার মতো দুর্বলচিত্তের লোক ছিলেন না, তাঁকে মেরে ঝুলানো হয়েছে। হয়তো কমিটির বাইরের কেউ কমিটির সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের জটিলতার বিষয়টি জানতে পেরে ভেতরের কারো সাথে মিলে এমন কান্ড ঘটাতেও পারে, বলা যায় না! সঠিক ময়না তদন্ত হলে মৃত্যুর সঠিক কারণ বেরিয়ে আসবে।
.
আমার জানামতে আঙিনায় এমন কোনো সাধু এখন নেই যিনি জামিনে বেরিয়ে এলে আবার তাঁর কাজিন কমিটির সদস্য কিংকর সুকেশ সঞ্জীবনদের সহায়তায় শ্রীঅঙ্গনে প্রবেশের থেকে বিজ্ঞানবন্ধুকে রুখতে পারবেন। সভাপতি কান্তি বন্ধু 'অসুস্থ' হয়ে যেহেতু হাসপাতালে ভর্তি, সেহেতু ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ উকিল সাহেবও চাইলে মামলা লড়তে পারেন। কিন্তু তিনি যেন হারার জন্য না লড়েন। যে কমিটির দেওয়া মিথ্যা অপবাদ সইতে না পেরে বন্ধুসেবক 'আত্মহত্যা করেছেন', সেই কমিটি থাকতে বাকি অল্পবয়সী সাধুরা চাইলেও কিছু করতে পারছেন না বলে অনেকেই আমাকে ফোনে আক্ষেপ করেছেন। যারা প্রতিবাদ করতে পারতেন, তাঁরা বিভিন্ন সময় প্রায় একই ধরণের অভিযোগে কমিটি থেকে এমনকি সম্প্রদায়ের সাধারণ সদস্যপদ থেকেও বহিস্কৃত হয়েছেন! তাই তাঁরাও চাইলে কিছু করতে পারছেন না। আবার শুনলাম সাধুদের বাইরের আইন জানা সদস্যরা কমিটির গঠনতন্ত্র এমনভাবে করে রেখেছেন যেন সহজে ভেঙেও দেওয়া না যায়! এর আগে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল সাহাকে সভাপতি পদ থেকে সরানোর পর তিনি নাকি ঐ গঠনতন্ত্রের দুর্বলতার সুযোগে মামলা করে দিয়েছিলেন কমিটির বিরুদ্ধে!
.
এদিকে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সাধুদের দেওয়া ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম শেষে সভাপতি সময় চেয়েছিলেন কাল রবিবার পর্যন্ত, যে কাল সন্ধ্যা ৭টায় মিটিং হবে কমিটির সাথে সাধুদের, কমিটি ভাঙ্গার ব্যাপারে। তিনি 'অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি' হওয়াতে সেটাও আর হচ্ছে না বলেই মনে হচ্ছে! তার মানে এতোকিছুর পরেও এবং জেলা প্রশাসক অতুল স্যারের নির্দেশ/অনুরোধ স্বত্ত্বেও কমিটি বহাল থাকছে। শুক্রবার সাধুদের অনশনে বসা যাতে নাহয়, সেজন্যই মিটিংয়ের তারিখ দেওয়া হয়েছিলো?
.
তবে আশার কথা হলো, যতদূর জানি এই ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। পুলিশ যেহেতু দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করেছে, তাই পুলিশ বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা দিয়েছে। 'নিজেদের কলংক মুছতে বা ঢাকতে' আরেকটি মামলা দিয়েছেন মহানাম সম্প্রদায়ের সভাপতি কান্তি বন্ধু ব্রহ্মচারী বাদী হয়ে, ৩০৬ ধারায়।এই মামলাটি কোথায় হয়েছে জানি না। যদি থানায় হয়ে থাকে, তাহলে এখানে উকিল না থাকলেও চলবে। এখানে জিআরও/সিএসআই বাদীর হয়ে মামলা লড়বেন। কারণ, থানা হয়ে কোর্টে গেলে মামলার বাদী হয়ে যায় রাষ্ট্র। আর যদি মামলা আদালতে দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে উকিল নিয়োগ দেওয়া লাগবে। সেক্ষেত্রে সভাপতি যেহেতু হাসপাতালে, সেহেতু যেকোনো একজন সাধুই চাইলে সাহস করে আদালতে গিয়ে একজন উকিল নিয়োগ দিতে পারেন। এই ক্ষেত্রে এদের বিরুদ্ধে আমি আমার মামলায় কোনো হিন্দু উকিলকে পাইনি, তাই বলা যায় এখানে মুসলিম উকিল লাগবে। উকিল না পেলে আমাকে জানাবেন, আমি জোগাড় করে দেবো এবং বন্ধুসেবকের ভক্তরা মামলার খরচ চালাবে। তবুও বন্ধুসেবকের আত্মাহুতি যেন কিছুতেই বৃথা না যায়।
.
গত ২১/০৯/১৮ আঙিনার ভেতর আমাকে মারার মামলায় কোর্টে প্রতিপক্ষে স্থানীয় মহিলা কাউন্সিলর তৃষ্ণা সাহার বড় ছেলেসহ সকল আসামীদের পক্ষে দাঁড়িয়ে এই শ্রীঅঙ্গন বর্তমান কমিটির প্রভাবশালী সদস্য নারায়ন উকিল বলেছিলেন, সবসময় ৩-৪ জন সাধু মন্দিরে থাকলেও তাঁদেরকে কেন আমি সাক্ষী মানিনি? অতএব মারার কোনো ঘটনাই নাকি ঘটেনি! আমি বলেছিলাম, সাধুরা ধর্মকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, মামলার ঝামেলায় জড়াতে চান না, তাই প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়দের সাক্ষী মেনেছি। বলেছিলাম সিসি ফুটেজ দিয়ে প্রমাণ করুন ঘটনা ঘটেছে কিনা। তাঁরা ফুটেজ দেখাতে পারেন নি। উল্টো রাষ্ট্রপক্ষের উকিল অনিমেষ রায়-জাহীদ ব্যাপারিরা নিষ্ক্রিয় থেকেছেন বিধায় আসামীরা খালাস পেয়ে গেছে শক্ত সাক্ষ্যর পরেও! (পরে রিভিশনের আবেদন করেছি) এবার বুঝলেন তো, আমি কেন একথা বলেছলাম বা রিভিশন পিটিশন লিখেছিলাম? স্থানীয়দের ভাষ্য, সাধুরাও অনেকটা কমিটির হাতে জিম্মি। এদের বাইরে বললেই বন্ধুসেবকের মতো পরিণতি ভোগ করতে হয় অথবা বহিস্কৃত হতে হয়। এতোদিন আমি এসব বলেছি বলে আমাকে 'নাস্তিক' ট্যাগ দিয়েছে, এখন বন্ধুসেবকের মৃত্যুর ঘটনায় সবাই তার সত্যতা পাচ্ছে!
.
মোট কথা, যেহেতু সভাপতি কোনো শক্ত ভূমিকা এখানে রাখছেন না, সেহেতু হিন্দু সম্প্রদায়ের বিখ্যাত এই শ্রীধাম ও সম্প্রদায়ের সম্মান ও নিরাপত্তার প্রশ্নে ফরিদপুরের বর্তমান প্রশাসন, পুলিশ ও আদালতকে এখন এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। লাশ সমাধিস্থ করার দিনের লাইভ ভিডিওসহ আমার সকল লেখায় অনেক তথ্য আছে, যা কাজে লাগানো যেতে পারে। একজন স্থানীয় হিসেবে ও বন্ধু সেবক মামার ভাগ্নে হিসেবে এই বিষয়ে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি প্রার্থনা করছি, যেন এই 'হত্যাকান্ডে'র সাথে জড়িত সকলের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করে দেশ-বিদেশে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যায় এবং বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরীহ সাধারণ জনগণ কতটা সুরক্ষিত আছে তা প্রমাণ করা যায়। অপরাধী নিজের দলের হোক আর বাইরের, কাউকেই যেন মাননীয়া ছাড় না দেন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা তিনি, তিনিই আমাদের শেষ ভরসাস্থল। জয় বাংলা।
.
দেব দুলাল গুহ / দেবু ফরিদী
.
সুতরাং, আগামীকাল সভাপতি কান্তি বন্ধুর বাদী হয়ে করা ৩০৬ ধারায়(সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের জেল) করা মামলায় ৩ দিনের রিমান্ড শেষে আসামী বিজ্ঞান বন্ধু যখন আদালতের কাঠগড়ার দাঁড়াবেন, গতবারের মতো এবারও হয়তো বাদী কান্তি বন্ধু সেখানে অনুপস্থিত থাকবেন। এবার আর কেউ তাঁকে 'ছি ছি' করতে পারবে না, কারণ এবার তিনি 'অসুস্থ'! শোনা যাচ্ছে, বিজ্ঞান বন্ধুর পক্ষে লড়ার জন্য নেতা গোছের এপিপিসহ প্রায় ৩০-৪০ জন আইনজীবী নাকি ইতিমধ্যেই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডঃ সুবল সাহার অধীনে আদালতে লড়ার জন্য প্রস্তুত! অন্যদিকে বাদীপক্ষে কোনো উকিলই এখনও ঠিক করা হয়নি বলে ভেতরের একটি সূত্র জানিয়েছে!
.
ফলে কি হবে? উকিলের অভাবে আসামী জামিন পেয়ে বেরিয়ে আসবে কালকেই? কারণ কালকেই আদালতের ছুটির আগের শেষ কর্মদিবস! তবে ঐ আদালতের বিচারক যিনি, তাঁকে যতটা চিনি, এতো সহজে তাঁর হাত থেকে ছাড়া পাওয়া মুশকিল হবে। তিনি বরিশালের লোক, খুব শক্ত। ১ এপ্রিলে আমাদের ওপর হামলার ঘটনায় আমার মা বাদী হয়ে করা মামলাটি তিনিই পি,বি,আইতে তদন্তে দিয়েছেন এবং সবাই বলে পুলিশের সংস্থাগুলোর মাঝে এই সংস্থাটির সুনামই এখন সবচেয়ে বেশি।
.
তবে প্রশাসন-পুলিশ-বিচারকেরা আন্তরিক থাকলেও যদি আঙিনার সাধুরা চুপচাপ অন্যায়কে মেনে নেন, তাহলে সেটা শ্রীঅঙ্গন শুধু নয়, মহানাম সম্প্রদায় শুধু নয়, হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্যও লজ্জা ও কলংকের হবে। যদি কাল বিজ্ঞান বন্ধু জামিনে বের হয়ে আসে এবং আবার আঙিনায় ফিরে আসে, তবে তা হবে বন্ধুসেবকের 'আত্মাহুতি'র অসম্মান। কেউ কেউ তো এমনও বলতে শুরু করেছে, বন্ধুসেবক আত্মহত্যা করার মতো দুর্বলচিত্তের লোক ছিলেন না, তাঁকে মেরে ঝুলানো হয়েছে। হয়তো কমিটির বাইরের কেউ কমিটির সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের জটিলতার বিষয়টি জানতে পেরে ভেতরের কারো সাথে মিলে এমন কান্ড ঘটাতেও পারে, বলা যায় না! সঠিক ময়না তদন্ত হলে মৃত্যুর সঠিক কারণ বেরিয়ে আসবে।
.
আমার জানামতে আঙিনায় এমন কোনো সাধু এখন নেই যিনি জামিনে বেরিয়ে এলে আবার তাঁর কাজিন কমিটির সদস্য কিংকর সুকেশ সঞ্জীবনদের সহায়তায় শ্রীঅঙ্গনে প্রবেশের থেকে বিজ্ঞানবন্ধুকে রুখতে পারবেন। সভাপতি কান্তি বন্ধু 'অসুস্থ' হয়ে যেহেতু হাসপাতালে ভর্তি, সেহেতু ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ উকিল সাহেবও চাইলে মামলা লড়তে পারেন। কিন্তু তিনি যেন হারার জন্য না লড়েন। যে কমিটির দেওয়া মিথ্যা অপবাদ সইতে না পেরে বন্ধুসেবক 'আত্মহত্যা করেছেন', সেই কমিটি থাকতে বাকি অল্পবয়সী সাধুরা চাইলেও কিছু করতে পারছেন না বলে অনেকেই আমাকে ফোনে আক্ষেপ করেছেন। যারা প্রতিবাদ করতে পারতেন, তাঁরা বিভিন্ন সময় প্রায় একই ধরণের অভিযোগে কমিটি থেকে এমনকি সম্প্রদায়ের সাধারণ সদস্যপদ থেকেও বহিস্কৃত হয়েছেন! তাই তাঁরাও চাইলে কিছু করতে পারছেন না। আবার শুনলাম সাধুদের বাইরের আইন জানা সদস্যরা কমিটির গঠনতন্ত্র এমনভাবে করে রেখেছেন যেন সহজে ভেঙেও দেওয়া না যায়! এর আগে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল সাহাকে সভাপতি পদ থেকে সরানোর পর তিনি নাকি ঐ গঠনতন্ত্রের দুর্বলতার সুযোগে মামলা করে দিয়েছিলেন কমিটির বিরুদ্ধে!
.
এদিকে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সাধুদের দেওয়া ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম শেষে সভাপতি সময় চেয়েছিলেন কাল রবিবার পর্যন্ত, যে কাল সন্ধ্যা ৭টায় মিটিং হবে কমিটির সাথে সাধুদের, কমিটি ভাঙ্গার ব্যাপারে। তিনি 'অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি' হওয়াতে সেটাও আর হচ্ছে না বলেই মনে হচ্ছে! তার মানে এতোকিছুর পরেও এবং জেলা প্রশাসক অতুল স্যারের নির্দেশ/অনুরোধ স্বত্ত্বেও কমিটি বহাল থাকছে। শুক্রবার সাধুদের অনশনে বসা যাতে নাহয়, সেজন্যই মিটিংয়ের তারিখ দেওয়া হয়েছিলো?
.
তবে আশার কথা হলো, যতদূর জানি এই ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। পুলিশ যেহেতু দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করেছে, তাই পুলিশ বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা দিয়েছে। 'নিজেদের কলংক মুছতে বা ঢাকতে' আরেকটি মামলা দিয়েছেন মহানাম সম্প্রদায়ের সভাপতি কান্তি বন্ধু ব্রহ্মচারী বাদী হয়ে, ৩০৬ ধারায়।এই মামলাটি কোথায় হয়েছে জানি না। যদি থানায় হয়ে থাকে, তাহলে এখানে উকিল না থাকলেও চলবে। এখানে জিআরও/সিএসআই বাদীর হয়ে মামলা লড়বেন। কারণ, থানা হয়ে কোর্টে গেলে মামলার বাদী হয়ে যায় রাষ্ট্র। আর যদি মামলা আদালতে দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে উকিল নিয়োগ দেওয়া লাগবে। সেক্ষেত্রে সভাপতি যেহেতু হাসপাতালে, সেহেতু যেকোনো একজন সাধুই চাইলে সাহস করে আদালতে গিয়ে একজন উকিল নিয়োগ দিতে পারেন। এই ক্ষেত্রে এদের বিরুদ্ধে আমি আমার মামলায় কোনো হিন্দু উকিলকে পাইনি, তাই বলা যায় এখানে মুসলিম উকিল লাগবে। উকিল না পেলে আমাকে জানাবেন, আমি জোগাড় করে দেবো এবং বন্ধুসেবকের ভক্তরা মামলার খরচ চালাবে। তবুও বন্ধুসেবকের আত্মাহুতি যেন কিছুতেই বৃথা না যায়।
.
গত ২১/০৯/১৮ আঙিনার ভেতর আমাকে মারার মামলায় কোর্টে প্রতিপক্ষে স্থানীয় মহিলা কাউন্সিলর তৃষ্ণা সাহার বড় ছেলেসহ সকল আসামীদের পক্ষে দাঁড়িয়ে এই শ্রীঅঙ্গন বর্তমান কমিটির প্রভাবশালী সদস্য নারায়ন উকিল বলেছিলেন, সবসময় ৩-৪ জন সাধু মন্দিরে থাকলেও তাঁদেরকে কেন আমি সাক্ষী মানিনি? অতএব মারার কোনো ঘটনাই নাকি ঘটেনি! আমি বলেছিলাম, সাধুরা ধর্মকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, মামলার ঝামেলায় জড়াতে চান না, তাই প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়দের সাক্ষী মেনেছি। বলেছিলাম সিসি ফুটেজ দিয়ে প্রমাণ করুন ঘটনা ঘটেছে কিনা। তাঁরা ফুটেজ দেখাতে পারেন নি। উল্টো রাষ্ট্রপক্ষের উকিল অনিমেষ রায়-জাহীদ ব্যাপারিরা নিষ্ক্রিয় থেকেছেন বিধায় আসামীরা খালাস পেয়ে গেছে শক্ত সাক্ষ্যর পরেও! (পরে রিভিশনের আবেদন করেছি) এবার বুঝলেন তো, আমি কেন একথা বলেছলাম বা রিভিশন পিটিশন লিখেছিলাম? স্থানীয়দের ভাষ্য, সাধুরাও অনেকটা কমিটির হাতে জিম্মি। এদের বাইরে বললেই বন্ধুসেবকের মতো পরিণতি ভোগ করতে হয় অথবা বহিস্কৃত হতে হয়। এতোদিন আমি এসব বলেছি বলে আমাকে 'নাস্তিক' ট্যাগ দিয়েছে, এখন বন্ধুসেবকের মৃত্যুর ঘটনায় সবাই তার সত্যতা পাচ্ছে!
.
মোট কথা, যেহেতু সভাপতি কোনো শক্ত ভূমিকা এখানে রাখছেন না, সেহেতু হিন্দু সম্প্রদায়ের বিখ্যাত এই শ্রীধাম ও সম্প্রদায়ের সম্মান ও নিরাপত্তার প্রশ্নে ফরিদপুরের বর্তমান প্রশাসন, পুলিশ ও আদালতকে এখন এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। লাশ সমাধিস্থ করার দিনের লাইভ ভিডিওসহ আমার সকল লেখায় অনেক তথ্য আছে, যা কাজে লাগানো যেতে পারে। একজন স্থানীয় হিসেবে ও বন্ধু সেবক মামার ভাগ্নে হিসেবে এই বিষয়ে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি প্রার্থনা করছি, যেন এই 'হত্যাকান্ডে'র সাথে জড়িত সকলের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করে দেশ-বিদেশে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যায় এবং বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরীহ সাধারণ জনগণ কতটা সুরক্ষিত আছে তা প্রমাণ করা যায়। অপরাধী নিজের দলের হোক আর বাইরের, কাউকেই যেন মাননীয়া ছাড় না দেন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা তিনি, তিনিই আমাদের শেষ ভরসাস্থল। জয় বাংলা।
.
দেব দুলাল গুহ / দেবু ফরিদী